মধু মৌসুম আরো একমাস বাকী তার আগেই চুরি হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের মধু
রাকিবুল হাসান( সাতক্ষীরা)শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনে মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই মৌচাক কেটে একটি চক্র চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মধু।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাছ ও কাঁকড়া ধরার পাশ নিয়ে অসাধু জেলে-বাওয়ালীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করে অপরিপক্ক মৌচাকের মধু আহরণ করছে। ফলে মৌসুম শুরুর আগেই শূন্য হতে চলেছে সাতক্ষীরা রেঞ্জের মৌচাক। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রকৃত মৌয়ালরা।
তবে এটা নতুন না, প্রতিবছরই এই চক্র মধু চুরি করে থাকে। যদি পরবর্তীতে জানাযায় কিন্তু নিরবতায় বনবিভাগ। কেউ বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে, কেউবা বনবিভাগের অসৎ কর্মকতাদের সাথে যোগসাজশে মৌচাক উজাড় করছে।
গোপন তথ্যমতে জানা যায়, বুড়িগোয়ালিনীর মহসিনের হুলো এলাকার রাসেল একটি চক্র ও আসাদুল সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া ধরে ফেরার পথে দুইটি মৌচাক কেটে নিয়ে আসে।একই ভাবে মুন্সিগঞ্জের হরিনগর বাজার সংলগ্ন এলাকার একাদশী রানী ও শ্রীদাস নামের দুইজন মাছ ধরে ফেরার পথে প্রায় চার কেজি মধু আহরণ করে নিয়ে আসে। এছাড়াও অহরহ নাম না জানা কত জেলে মধু চরি করছে তার শেষ নেই।
অপর দিকে মাছের পাশ নিয়ে মধু চুরি করাতে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকার। কারন বনবিভাগের তথ্যমতে, প্রতিবছর ১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দুই মাস মধু আহরণের মৌসুম। এ জন্য প্রতিবছর ১ এপ্রিল সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে ‘মধু আহরণ উৎসব’ শুরু হয়ে থাকে। বছরে ১ হাজার ২২৫ কুইন্টাল মধু এবং ৩৬৭ দশমিক পাঁচ কুইনন্টাল মোম আহরণের মাধ্যমে রাজস্ব আয় হয় ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ টাকা। যখন মধু চুরি হবে তখন মধুর রাজস্ব থেকে ছিটকে পড়বে সরকার ৷
স্থানীয় মৌয়ালরা জানান, মধু মৌসুমে একটা পরিপূর্ণ মৌচাকে ২০-২৫ কেজি মধু পাওয়া যায়। একেকটি চাক থেকে ৬/৭ বার মধু সংগ্রহ করা যায়। কিন্তু যারা চোরা মধু আহরণকারী তারা অপরিপক্ক চাকের মধু আহরণ করার কারণে মাত্র ৩শ থেকে ৫শ গ্রাম মধু আহরণ করতে পারে। ফলে বনবিভাগ থেকে বৈধ পাস নিয়ে সুন্দরবনে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মধু পায় না মৌয়ালরা। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তারা।
এ ব্যাপারে বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, মাছ ও কাঁকড়া ধরার পাশ দেওয়া আছে। অসাধু চক্রের অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। আমাদের টহল অব্যাহত আছে।